[ad_1]
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের করোনাভাইরাস (কোভিড -১৯) পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ৫ টার দিকে এই বুদ্ধিজীবী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
রাত ১০ টা ৫০ মিনিটের দিকে করোনা পজিটিভের বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন ড. আনিসুজ্জামানের ছোট ভাই মো. আক্তারুজ্জামান ৷
মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘রাত পৌনে ১১ টার দিকে হাসপাতাল থেকে আমরা খবর পাই, আমার ভাইয়ের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ এসেছে ৷ এখনো তিনি সিএমএইচের মর্গে আছেন। ‘
আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম আগামীকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যেতে। সেখান ঘণ্টাখানেক রাখার পর বাদ জুমা ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা পড়াতে চেয়েছিলাম। তারপর সেখান থেকে আজিমপুর কবরস্থানের আমাদের বাবার কবরে ভাইকে শায়িত করব এমনটাই ইচ্ছা ছিল। তখন আমাদের ভাবনা ছিল করোনা নেগেটিভ আসবে। ‘
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের ছোট ভাই আরো বলেন, ‘কিন্তু করোনা পজিটিভ আসায় এখন তো আর তাঁকে পাবলিক প্লেসে নিয়ে যাওয়া যাবে না। তার মানে জানাজা না হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু আমরা চাইবো যাতে বাবার কবরের পাশেই তাঁর দফন করানো হয়। বাকিটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে, দাফন ও জানাজা সংক্রান্ত কাজে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ‘
ড. আনিসুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরেই ফুসফুসে সংক্রমণসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। গত ২৭ এপ্রিল হার্ট, কিডনিসহ বেশ কিছু রোগ নিয়ে তিনি মহাখালীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। আজ বিকেলে সেখানেই তিনি মারা যান।
আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা এ টি এম মোয়াজ্জেম ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন ছিলেন গৃহিনী। আনিসুজ্জামানরা ছিলেন পাঁচ ভাইবোন। তিন বোনের ছোট আনিসুজ্জামান, তারপর আরেকটি ভাই। পরে পরিবারটি ঢাকায় চলে আসে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগ্রন্থ রয়েছে ড. আনিসুজ্জামানের। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাঁকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ ছাড়া একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ড. আনিসুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে গঠিত জাতীয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন। শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তাঁকে ভারত সরকার তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পদক প্রদান করে।
[ad_2]