[ad_1]
করোনা রোগী শনাক্তের পরীক্ষাগার বন্ধ করে বিকেলেই বাড়ি চলে যান সেখানকার চিকিৎসক ও অন্য স্বাস্থ্যকর্ম রা. কিন্তু রাতেই তাদের আবার ডাক পড়ে. বাসা থেকে ডেকে এনে এক মৃত ব্যক্তির কোভিড -19 রোগ শনাক্তের পরীক্ষা করা হয়. বুধবার দিবাগত রাত সোয়া 1২ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পরীক্ষাগারে ওই মৃত ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা শেষ হয়.
এ ঘটনায় চিকিৎসকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, মৃত ব্যক্তি একজন মন্ত্রীর আত্মীয়, তাই ওপরের চাপে মধ্য রাতে এই পরীক্ষা করতে তারা বাধ্য হয়েছেন।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ইফতারের আগ মুহূর্তে আবু মুসা (৬০) নামে এক রোগী মারা যান। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবজারভেশন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরই কোভিড -১৯ শনাক্তের জন্য নমুনা পরীক্ষা করতে নির্দেশ আসে। ওই নির্দেশ উপেক্ষা করার সুযোগ ছিল না চিকিৎসকদের। পরীক্ষা-সংশ্লিষ্ট পাঁচজন চিকিৎসক ও দুই কর্মীকে আবার বাসা থেকে মেডিকেল কলেজে ডাকা হয়।
একাধিক চিকিৎসক জানান, বুধবার রাত আটটার দিকে পরীক্ষাগার খোলা হয়। এরপর ওই মৃত ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করতে রাত সোয়া ১২ টা গড়িয়ে যায়। এ কারণে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অথচ ওই দিন বিকেলের মধ্যে ৯১ নমুনার পরীক্ষা শেষ করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মীরা বাসায় চলে যান। সারা দিন কাজের পর তাঁদের আবার পরীক্ষাগারে ফিরতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, মৃত ব্যক্তি (আবু মুসা) সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কারওর আত্মীয় হবেন। এ জন্য রাতের দিকে ল্যাব খুলে ওই ব্যক্তির কোভিড -১৯ রোগ শনাক্তের পরীক্ষা হয়। তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ছিল।
আবুল কালাম আরও বলেন, মৃত্যুর আগে বুধবার বেলা তিনটা নাগাদ ওই ব্যক্তির নমুনা আমরা হাতে পাই। ততক্ষণে আমাদের ল্যাবে (পরীক্ষাগার) ৯১ নমুনা পরীক্ষা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমরা পরদিনের (বৃহস্পতিবার) পরীক্ষার তালিকায় ওই নমুনা রেখে দিয়েছিলাম। ওপরের চাপে বুধবার রাতে আমাদের একটি মাত্র নমুনা পরীক্ষা করতে হয়েছে।
মৃত আবু মুসা চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরের ঈদগাঁ এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ওই এলাকায় করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে মৃত্যুর দুদিন আগে চট্টগ্রাম মেডিকেলের অবজারভেশন সেলে ভর্তি করা হয়। তিনি একজন মন্ত্রীর আত্মীয় বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মৃত আবু মুসা একজন মন্ত্রীর আত্মীয়। এ জন্য রাতের দিকে চিকিৎসক ডেকে ল্যাব খুলে তাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যা শোভন মনে হয়নি।
ফয়সল ইকবাল চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের অনেক চিকিৎসক বন্ধু করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। সাধারণ রোগীদের মতো তাঁদেরও নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। কেউ বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন না। বুধবারের মৃত ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা বৃহস্পতিবার করা যেত। যেমন চট্টগ্রাম সিটির একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুর ১০/১২ ঘণ্টা পর তাঁর শরীরে করোনা উপস্থিতি ধরা পড়ে। স্বাভাবিক নিয়মে ওই আওয়ামী লীগ নেতার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে কথা বলে যাব।’
[ad_2]