বাবার লাশ ঢাকার পর গ্রামেও দাফনে বাধা! – Dainik Amader Shomoy



[ad_1]

বাবা মারা গেছেন। সন্তানদের চেষ্টা ঢাকাতেই তাদের জনককে দাফন করবেন। কিন্তু পাশে দাঁড়ালেন না এলাকাবাসী। নিষ্ঠুরের মতো বললেন, লাশ দাফন করতে দেবেন না। এমন আচরণে বেদনা ভারাক্রান্ত পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ে। সন্তানরা চিন্তা করে গ্রামে নিয়ে জন্মদাতা পিতার লাশ দাফন করবে। কিন্তু হায় … সেখানেও মিললনা তিন হাত ঘরের জায়গা!

মৃত মানুষটি কবরের জায়গা না পাওয়ার কারণ একটাই। করোনাভাইরাস! বাবার দাফনের জায়গা না পেয়ে সন্তানরা উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানান। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ভাইস চেয়ারম্যান ও কয়েকজন মুসল্লির সহায়তায় মৃতদেহ গোসল দেওয়া ও জানাজা পড়ানো হয়।

করোনাসন্দেহে দেশে লাশ দাফন করতে না দেওয়ার ঘটনাটি প্রথমে ঘটে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায়। পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন মৃত বৃদ্ধ। পরে তার লাশ সন্তানরা নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন ইউনিয়নে মুসলিমহাটি গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানেও একই ঘটনা ঘটে।

বুধবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফেসবুক পেজে এই ঘটনার বিবরণ দেয়া হয়। এতে জানানো হয়, মৃত ব্যক্তিকে গোসল ও জানাজা পড়িয়ে দাফনের জন্য প্রস্তুত করিয়ে দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাবির হোসেন খান পাভেলসহ কয়েকজন মুসল্লি। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

ওই বৃদ্ধের ছেলের বরাত দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফেসবুক পেজের স্ট্যাটাসে আরও জানানো হয়, ওই বৃদ্ধ গত দেড়মাস ধরে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। আর্থিক সমস্যার কারণে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারেননি স্বজনরা। বুধবার রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় বাসায় ওই বৃদ্ধ বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। করোনাভাইরাসে তার মৃত্যু হয়েছে, প্রতিবেশীদের এমন সন্দেহের কারণে তাকে ঢাকায় দাফন করা সম্ভব হয়নি।

যার কারণে লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এখানেও একই অবস্থা। একাধিক ব্যক্তির সন্দেহ হলো, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ফলে লাশের গোসল, জানাজা, দাফনে জটিলতা দেখা দেয়। অবশেষে উপায় না পেয়ে নিহতের স্বজনরা নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। মৃত ব্যক্তির লাশ হাসপাতালে এনে গোসল ও জানাজা পড়িয়ে তার নিজ গ্রামে দাফনের জন্য পাঠানো হয়। এ পুরো প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেন উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান তাবির হোসেন খান পাভেল।

যেসব ব্যক্তি লাশের গোসল ও জানাজা পড়িয়ে দাফনের জন্য প্রস্তুত করেছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে ওই ফেসবুক পেজে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অনেকে। সেইসঙ্গে এ ধরনের ঘৃণীত কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অনেকে। তারা বলেছেন, করোনাভাইরাসে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, এমন সন্দেহ করে প্রতিবেশী ও সাধারণ জনগণ যে অসহযোগিতামূলক আচরণ করেছেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।



[ad_2]