[ad_1]
সরকার-মালিক-শ্রমিকপক্ষের। পোশাকশ্রমিকদের এপ্রিল মাসের মজুরি এপ্রিল ৫ মাসের মজুরি এপ্রিল ৫ মাসের৫ নার কারণে গত এপ্রিলে কারখানা বন্ধের সময় শ্রমিকেরা ৬৫ শতাংশ মজুরি পাবেন। তবে বাড়তি ৫ শতাংশ অর্থ চলতি মে মাসের মজুরির সঙ্গে সমন্বয় করার কথা বলেছেন পোশাকশিল্পের মালিকেরা।
শ্রম ভবনে আজ সোমবার অনুষ্ঠিত সরকার-মালিক-শ্রমিকপক্ষের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১ টায় শুরু হওয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। এতে পোশাকশিল্পের মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সভাপতিদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শ্রমিক জোট ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) অধিভুক্ত শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিকেল পৌনে পাঁচটায় বৈঠক শেষ হয়।
বৈঠক শেষে শ্রমিকনেতা আমিরুল হক আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইবিসির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত এপ্রিলে কারখানা বন্ধকালীন শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ মজুরি দেওয়ার পূর্বের সিদ্ধান্তটি থেকে মালিকেরা সরে এসেছেন। তাঁরা এখন ৬০ শতাংশের পরিবর্তে ৬৫ শতাংশ মজুরি দেবেন। এ ছাড়া আমরা কারখানা লে-অফ প্রত্যাহার করা, শ্রমিক ছাঁটাই না করা ও ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবি করেছি। মালিকেরা সেটিও মেনে নিয়েছেন। ’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘৬০ শতাংশের পরিবর্তে ৬৫ শতাংশ মজুরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেটি মে মাসের মজুরির সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। কারণ ইতিমধ্যে কারখানা বন্ধকালীন ৬০ শতাংশ মজুরি দিতে সব সদস্যকে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি। নতুন করে আবার সিদ্ধান্ত দিলে জটিলতা তৈরি হবে। ’
সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক ও সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে আজাদ, আইবিসির চেয়ারম্যান হেদায়েতুল ইসলাম, মহাসচিব চায়না রহমান, শ্রমিকনেতা বাবুল আক্তার, নাজমা আক্তার, সালাউদ্দিন স্বপন প্রমুখ।
গত ২৮ এপ্রিল সরকার-মালিক-শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়, এপ্রিল মাসে কারখানা বন্ধের সময়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা মোট মজুরির ৬০ শতাংশ অর্থ পাবেন। আর যে কদিন কর্মদিবস ছিল সে কদিনের পূর্ণ মজুরি পাবেন তাঁরা। পরদিন কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে সেটি চূড়ান্ত করে শ্রম মন্ত্রণালয়। তবে সেই বৈঠক বর্জন করে শতভাগ মজুরি দেওয়ার দাবি করেন আইবিসির নেতারা। পরে বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএর নেতারা তাঁদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের সভাটি হয়েছে। মূলত আইবিসির সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ থাকায় তাদের দাবি গুরুত্বসহকারে নিয়ে থাকে মালিকপক্ষ।
এদিকে বিকেএমইএ ২ মে ও বিজিএমইএ ৩ মে তাদের সদস্য কারখানাগুলোকে শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ মজুরি দিতে নির্দেশনা দিয়েছে। শ্রমিকের মজুরির বিষয়ে একক কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে উভয় সংগঠন। এর ফলে কোনো কারখানা ৬০ শতাংশের বেশি দিতে চাইলেও পারবে না। বিকেএমইএ এটিও বলেছে, মজুরি নিয়ে শ্রম অসন্তোষ হলে তারা দায়িত্ব নেবে না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবাইকে এক জায়গায় রাখার জন্যই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে কোনো কারখানায় ভিন্ন উদাহরণ তৈরি হলে আশপাশের কারখানায় শ্রম অসন্তোষ তৈরি হবে। অতীতে বহুবার এমন ঘটনা দেখা গেছে। তাই সরকার-মালিক-শ্রমিকপক্ষের সমঝোতায় সব কারখানার শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ মজুরি দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ’
এদিকে মে মাস চলে এলেও গত মার্চের মজুরি পরিশোধ করেনি ৫১৪ টি শিল্পকারখানা। শিল্প পুলিশ জানায়, সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহ ও খুলনায় ৭ হাজার ৬০২ টি শিল্পকারখানা রয়েছে। তার মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৫১৪ টি বেতন-ভাতা পরিশোধ করেনি। এগুলোর মধ্যে বিজিএমইএর সদস্য ৮৩, বিকেএমইএর ৬৯ ও বিটিএমএর ২২ সদস্য কারখানা রয়েছে।
করোনার কারণে বন্ধ থাকা শিল্পকারখানা প্রতিদিনই খুলছে। শিল্প পুলিশের তথ্যানুযায়ী, সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহ ও খুলনায় ৭ হাজার ৬০২ টি শিল্পকারখানার মধ্যে আজ সোমবার চালু ছিল ৩ হাজার ৪৩ টি। তার মধ্যে বিজিএমইএর ১ হাজার ১৭৪, বিকেএমইএর ৩৩৫ ও বিটিএমএর ১৭১ টি কারখানা রয়েছে। এসব এলাকায় বেপজার অধীনে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ৩৬৪ কারখানার মধ্যে ২৯৬ টি আজ উৎপাদন চালিয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু পোশাক কারখানা রয়েছে।
[ad_2]